সাত পদের ভর্তার রেসিপি

 এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে যারা ভর্তা পছন্দ করে না। ভর্তা বাঙালিদের অত্যন্ত প্রিয় খাবার। বাঙালিদের কাছে ভাতের সঙ্গে ভর্তার একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আদিম মানুষেরা যখন রান্না করতে পারত না তখন তারা বিভিন্ন রকমের শাক সবজি সিদ্ধ করে ভর্তা বানিয়ে খেত। তখন থেকেই এই ভর্তার প্রচলন হয়ে আসছে। বাঙালিরা হরেক রকমের ভর্তা বানিয়ে থাকে। তবে অধিকাংশ ভর্তা বানানোর নিয়মই একই রকম।নববর্ষে পান্তা ভাত আর ভর্তা বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার। বাঙালির রুচি বৃদ্ধিতে ভর্তা অতুলনীয় একটি খাবার। এজন্য ঐতিহ্যবাহী সাত রকমের ভর্তা তৈরির পদ্ধতি জেনে নিন।

 



আলু ভর্তা 

 

উপকরণঃ 

১/ আলু

২/ কাঁচা মরিচ কুচি 

৩/ পেঁয়াজ কুচি 

৪/ সরিষার তেল 

৫/ পরিমাপ মতো লবণ 

 

প্রণালীঃ 

 

৩ টি বড় সাইজের আলু ধুয়ে নিন। আলু গুলো ভাত রান্নার সময় ভাতের ভিতর দিয়ে সিদ্ধ করে নিন অথবা আপনি গরম পানিতে দিয়ে চুলায় সিদ্ধ করে নিতে পারেন। সিদ্ধ আলু গুলো ঠান্ডা করে খোসা ছাড়িয়ে চটকে মেখে রাখুন। এরপর কাঁচা মরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি, স্বাদ মতো লবণ ও পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে উপকরণ গুলো মেখে নিন। চটকে রাখা আলু ও উপকরণ গুলো একএে মেখে নিলেই তৈরি হয়ে গেল সুস্বাদু আলু ভর্তা।

 

পটল ভর্তা 

 

উপকরণঃ 

১/ পটল

২/ কাঁচা মরিচ কুচি 

৩/ পেঁয়াজ কুচি 

৪/ সরিষার তেল 

৫/ পরিমাণ মতো লবণ। 

 

প্রণালীঃ

 

প্রথমে পটল গুলো হাত দিয়ে ফাটিয়ে  নিন। এবার ভাত রান্নার সময় পটল গুলো চুলার ভিতর দিয়ে উল্টে পাল্টে পুড়িয়ে নিন।পোড়ানো হয়ে গেলে ঠান্ডা করে পটলের পোড়া খোসা গুলো ছাড়িয়ে চটকে মেখে নিন। এরপর কাঁচা মরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি, স্বাদ মতো লবণ ও পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে চটকে রাখুন।এবার চটকে রাখা পটল গুলো একএে মেখে নিয়ে তৈরি করে ফেলুন মজাদার পটল ভর্তা।

 

পেঁপে ভর্তা 

 

উপকরণঃ 

১/ পেঁপে 

২/ কাঁচা মরিচ কুচি 

৩/ পেঁয়াজ কুচি 

৪/ সরিষার তেল 

৫/ পরিমাণ মতো লবণ। 

 

প্রনালীঃ 

 

একটি পেঁপে নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে নিন। পেঁপের আঠা গুলো ভালো ভাবে ধুয়ে নিন। এরপর টুকরো করে রাখা পেঁপে গুলো ভাত রান্নার সময় ভাতের ভিতরে দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ পেঁপে গুলো ঠান্ডা করে চটকে মেখে নিন। কাঁচা মরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি, স্বাদ মতো লবণ ও পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে চটকে রাখুন। এবার চটকে রাখা পেঁপে গুলো একএে মিক্স করে নিয়ে তৈরি করে ফেলুন মজার পেঁপে ভর্তা।

 

ডিম ভর্তা 

 

উপকরণঃ 

১/ ডিম 

২/ কাঁচা মরিচ কুচি 

৩/ পেঁয়াজ কুচি

৪/ সরিষার তেল

৫/ পরিমাণ মতো লবণ। 

 

প্রণালীঃ

 

ডিম গুলো চুলায় দিয়ে ভালো ভাবে সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ ডিম এর খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে চটকে মেখে রাখুন। এবার কাঁচা মরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি, স্বাদ মতো লবণ ও পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে উপকরণ গুলো ভালো করে চটকে মেখে নিন। এবার  মেখে রাখা উপকরণ গুলো ও চটকে রাখা ডিম গুলো একএে ভালো করে মেখে নিলেই তৈরি হয়ে গেল মজাদার ডিম ভর্তা।

 

মসুরের ডাল ভর্তা 

 

উপকরণঃ

১/ মসুরের ডাল 

২/ কাঁচা মরিচ কুচি 

৩/ পেঁয়াজ কুচি 

৪/ সরিষার তেল 

৫/ পরিমাণ মতো লবণ। 

 

প্রণালীঃ 

 

প্রয়োজন মতো মসুরের ডাল নিয়ে একটি সাদা কাপড়ে বেধে ভালো ভাবে ধুয়ে নিন। এরপর ভাত রান্নার সময় ভাতের ভিতরে দিয়ে মসুরের ডাল গুলো সিদ্ধ করে নিন বা আপনি গরম পানিতে দিয়েও সিদ্ধ করে নিতে পারেন।  সিদ্ধ হয়ে গেলে ঠান্ডা করে ডাল গুলো চটকে মেখে রাখুন।  কাঁচা মরিচ কুচি, পেয়াজ কুচি, স্বাদ মতো লবণ ও পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে উপকরণ গুলো ভালো করে একটু চটকে মেখে নিন। মেখে রাখা উপকরণ গুলো ও চটকে রাখা মসুরের ডাল গুলো একএ করে মেখে নিলেই তৈরি হয়ে গেল রকমারি মসুরির ডাল ভর্তা।

 

বেগুন ভর্তা 

 

১/ বেগুন 

২/ কাঁচা মরিচ কুচি 

৩/ পেঁয়াজ কুচি 

৪/ সরিষার তেল 

৫/ পরিমাণ মতো লবণ। 

 

প্রণালীঃ

 

প্রথমে ২ টি বেগুন নিন।বেগুন গুলো চুলায় ভালো করে পুড়িয়ে নিন। পোড়ানো হয়ে গেলে বেগুন গুলোর উপর অল্প পানি ছিটিয়ে  পোড়া খোসা ছাড়িয়ে চটকে মেখে নিন। এরপর কাঁচা মরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি, স্বাদ মতো লবণ ও পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে উপকরণ গুলো ভালো করে মেখে নিন। উপকরণ গুলো ও চটকে রাখা বেগুন গুলো একএে মিশিয়ে পরিবেশন করুন মজার বেগুন ভর্তা।

 

মাছ ভর্তা 

 

উপকরণঃ 

১/ মাছ ১ টি

২/ কাঁচা মরিচ কুচি 

৩/ পেঁয়াজ কুচি 

৪/ সরিষার তেল 

৫/ পরিমাণ মতো লবণ। 

 

প্রণালীঃ

 

একটি পাএে পরিমাণ মতো তেল গরম করে মাছ টি অল্প করে ভেজে নিন।এরপর ভালো করে মাছ এর কাঁটা বেছে একটু চটকে রাখুন।কাঁচা মরিচ কুচি,  পেঁয়াজ কুচি, স্বাদ মতো লবণ ও পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে উপকরণ গুলো ভালো করে চটকে মেখে রাখুন। উপকরণ গুলো ও চটকে রাখা মাছ একএে মিশিয়ে নিলেই তৈরি মাছের ভর্তা।



Comments